স্বামীর হাতে ভারতে পাচার হওয়ার ৯ মাস পর এক গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বেনাপোল সীমান্ত পুলিশের সহায়তায় বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদসহ অন্য সদস্যরা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাগেরহাটে নিয়ে আসেন।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ওই গৃহবধুর মা বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা করলে আদালত সেটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় গৃহবধুর স্বামী নড়াইল সদর উপজেলার বড় কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখ, আরিফের ভাই ফয়সাল শেখ, মা পরী বেগম ও বাবা আসাদ শেখকে আসামি করা হয়। পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার বেনাপোল সীমান্ত থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পিবিআই।
উদ্ধার ওই নারী বৃহস্পতিবার দুপুরে সমকালকে বলেন, ২০১৭ সালের ১লা আরিফের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আরিফ আমাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করত। আরিফের মা-বাবা আরিফের সঙ্গে ভারত যেয়ে কাজ করে খেতে বলেন। এ সবের মধ্যে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে কৌশলে আরিফ আমাকে নিয়ে ভারতে চলে যায়। সেখানে আরিফ আমাকে মুম্বাইয়ে একটি ফ্ল্যাটে রাখে। ওই ফ্ল্যাটে আরও তিনটি মেয়ে ছিল। তিনদিন সেখানে থাকার পরে পাশের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়। সেই ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝে আরিফের বন্ধুরা আসত এবং আমাকে নির্যাতন করত। ওই ফ্লাটে দুই মাস থাকার পর পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। তখন আরিফ ছিল না। সেখান থেকে নবজীবন নামের একটি এনজিওর কাছে আমাকে হস্তান্তর করে পুলিশ। সেখানে আটমাস থাকার পরে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আমাকে নিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে পিবিআই আমাকে নিয়ে আসে।
ওই নারীর মা বলেন, অনেকদিন পরে মেয়েকে কাছে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যেতে চাই। বিয়ে করে স্ত্রীকে যে পুরুষ পাচার করতে পারে, আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা পাচার হওয়া মেয়েটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আদালতে ১৬৪ ধারার ওই মেয়েটির জবানবন্দী গ্রহণের প্রস্তুতি ও আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।